নারানগিরি কৃষিফার্ম এলাকা, ২নং ওয়ার্ড, ২নং রাইখালী ইউনিয়ন, থানা-চন্দ্রঘোনা, উপজেলা-কাপ্তাই, রাংগামাটি পার্বত্য জেলা
চট্টগ্রামের বদ্দারহাট বাস টার্মিনাল হতে বাসযোগে রওনা হয়ে চন্দ্রঘোনার লিচুবাগান নামক স্থানে নামতে হবে। বাস হতে নেমে সামান্য ডানে গেলে কর্ণফুলী নদীর ঘাট দেখা যাবে। ঘাটে গিয়ে ফেরী পাড় হয়ে রিক্সাযোগে অথবা ফেরীঘাট হতে সরাসরি নৌকা করে কৃষি গবেষণা ঘাটে গিয়ে নামতে হবে।
ছবি | নাম | মোবাইল |
---|---|---|
![]() |
ড. এ এস এম হারুনর রশীদ | ০১৭১১৩৯৮৬৭৪, ০১৫৫৮৪২২৪০০ |
![]() |
শ্যাম প্রসাদ চাকমা | ০১৫৫৪৩১২৪১৫, ০১৮৩০৪২৪৪২২ |
![]() |
কামরুল হাসান | ০১৭৩৬২১৮৫৯৭, ০১৮১৩২০৭৮০৩ |
চন্দ্রঘোনা থানাধীন ২নং রাইখালী ইউনিয়নে অবস্থিত রাইখালী কৃষি গবেষনা কেন্দ্রটি অতি চমৎকার পরিবেশে অবস্থিত। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের গেট রয়েছে পাহাড়ী অপূর্ব নদী কর্ণফুলীর পাড় ঘেষে। গেট হতে তাকালে নদীর অপারে চোখে পড়বে কর্ণফুলী পেপার মিল, একটু পূর্বদিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে সুউচ্চ সীতা পাহাড়। মনে হবে সীতা পাহাড় যেন কর্ণফুলী নদীতে গোসল করতে নেমেছে। এগবেষণা কেন্দ্রে সাধারণ অনেক দূলর্ব জাতের ফল,শস্য, সব্জি ইত্যাদির গবেষণা করা হয়। নিচে কয়েকটির বর্ণনা আছে:
কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা থানাধীন নারানগিরি এলাকায় রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে উদ্ভাবিত সুমিষ্টি মাল্টা পার্বত্যাঞ্চলে বাণিজ্যিক আবাদের ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করেছে। পাহাড়ি জমি, মাটি এবং আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশে পার্বত্যাঞ্চলে মাল্টার উত্পাদনে ব্যাপক সম্ভাবনা নিশ্চিত করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। কাপ্তাই উপজেলার নারানগিরি রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণায় মাল্টার ফলন সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, এখানে সৃজিত বাগানের গাছে গাছে মাল্টা ফলের ব্যাপক সমারোহ। প্রায় ৫-৬ ফুট উচ্চতার ঢালপালা আর সবুজ পাতায় পরিবেষ্টিত গুচ্ছ আকৃতির গাছে সবুজ মাল্টা ফলের ভারে প্রায় ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে প্রতিটি গাছ। প্রতিটি গাছে গড়ে ২ শতাধিক মাল্টা ফল ধরেছে। ফলের আকৃতি ও গঠন বর্তমানে বিদেশ থেকে আমদানি করা মাল্টা অপেক্ষা পুষ্ট এবং রসালো প্রকৃতির। জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত বারি-১ নামের উন্নত জাতের মাল্টা আবাদে ব্যাপক গবেষণায় রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে এর সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়। রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম হারুনুর রশিদ জানান, মাল্টা চাষাবাদে সাফল্য সাধারণ মানুষের কাছে অবহিত করতে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ও স্থানীয়ভাবে প্রচারের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে এলাকার কৃষকদের মধ্যে দেশে উদ্ভাবিত মাল্টার আবাদ নিয়ে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আগ্রহীদের মধ্যে মাল্টার চারা সরবরাহ নিশ্চিত করতে গবেষণা কেন্দ্রে মাল্টার কলম তৈরির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা জানান, দেশের মাটিতে উদ্ভাবিত মাল্টার আবাদে ফলন ভালো হয় এবং ফলের মানও উন্নত। বাজারের বিদেশি মাল্টা অপেক্ষা মিষ্টি ও রসালো। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত মাল্টা বারি-১ জাতের আবাদে রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া যায়।
কাপ্তাইয়ের রাইখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট মরু অঞ্চলের ড্রাগণ ফল উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। এ ফল পার্বত্য এলাকার পাহাড়ী অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য বিশেষ উপযোগী বলে কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ধারণা পোষন করেন।
রাইখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, ড্রাগণ ফল সাধারণত মরু অঞ্চলে জন্মে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের পাহাড়ী এবং পানিশূন্য এলাকায় ড্রাগণ ফল ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। চ্টগ্রাম জেলাধীন ফটিকছড়ি হালদাভ্যালী টি স্টেটের মালিক নাদের খান থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে সর্ব প্রথম এ ফলের বীজ সংগ্রহ করে দেশে আনেন। তিনি তার নিজস্ব ভূমিতে এর চাষাবাদ শুরু করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট এ ফল চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করে। রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এইচ এম হারুনুর রশিদ উন্নত জাত আবিষ্কারের লক্ষ্যে কেন্দ্রে এ ফলের চাষ শুরু করেন। পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে সর্ব প্রথম তিনি এ ফল তার কেন্দ্রে চাষ করেন। এতে তিনি যথেষ্ট সফলও হয়েছেন।
ড. হারুন জানান, এটা পার্বত্য এলাকার শুষ্ক পাহাড়ী অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। গবেষণা কেন্দ্রে উন্নত জাত আবিষ্কার করে পাহাড়ী জনপদে ছড়িয়ে দেওয়াই তার মূল লক্ষ্য। কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ড্রাগণ ফল চারা লাগানোর ১০/১১ মাসে ফুল আসে। এরপরবর্তী এক মাসের মধ্যে ফল পরিপক্বতা লাভ করে। এ ফল লাল, সাদা ও হলুদ রঙের হয়ে থাকে। এর ফুল শুধুমাত্র রাতের বেলায় একবার ফুটে থাকে। প্রতিটি ফল ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের হয়। এটি অত্যন্ত মূল্যবান একটি ফল। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পাঁচ তারকা হোটেলে ড্রাগণ ফলের ব্যবহার হয়ে থাকে।
ড্রাগণ ফল ডায়বেটিস ও হৃদ রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী বলে কেন্দ্রের কর্মকর্তাগণ জানান। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শওকত মোমেন শাহজাহান এমপি রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তার সফর সঙ্গী হিসেবে কমিটির সদস্য আহমেদ নাজনীন সুলতানা এমপি ও আরো অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড, হারুনুর রশিদ কমিটির সভাপতিকে কেন্দ্রে উৎপাদিত একটি ড্রাগণ ফল প্রদান করেন। এ ফল তিনি প্রথম দেখেছেন বলে জানান।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস